
ওয়ার্প প্রতিষ্ঠিত হয় ২০২১ সালে, মূল লক্ষ্য ছিল বিভিন্ন কোম্পানিকে তাদের শিপিং ও সরবরাহ চেইন সহজ করা এবং খরচ কমানো। এটি একটি প্রযুক্তি-নির্ভর নেটওয়ার্ক তৈরি করে যেখানে শিপার, ক্যারিয়ার এবং ওয়্যারহাউস একসঙ্গে কাজ করে। এখন তারা চায়, এই পুরো সাপ্লাই চেইনকে আরও কার্যকর করতে ওয়্যারহাউসগুলোতে রোবট ব্যবহার করে কাজগুলো স্বয়ংক্রিয় করতে। ওয়ার্পের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও CEO ড্যানিয়েল সোকলোভস্কি জানান, তারা সবসময় চেষ্টা করছেন তাদের গ্রাহকদের জন্য শিপিং ব্যবস্থা আরও কার্যকর ও সহজ করে তুলতে। Walmart, Gopuff, এবং HelloFresh-এর মতো বড় কোম্পানিগুলো তাদের গ্রাহক। AI-এর অগ্রগতির ফলে তারা মনে করছেন, আরও বেশি কিছু কাজ এখন অটোমেট করা সম্ভব। সোকলোভস্কি বলেন, তারা সাপ্লাই চেইনের ট্রাকিং বা ডেলিভারির মতো বড় অংশগুলো অটোমেট করতে পারবে না, কিন্তু ওয়্যারহাউসের ভিতরের কাজগুলোতে পরিবর্তন আনা সম্ভব। সেই লক্ষ্যেই তারা প্রথমে লস অ্যাঞ্জেলেসে তাদের একটি পরীক্ষামূলক ওয়্যারহাউসে ক্যামেরা বসিয়ে কম্পিউটার ভিশনের মাধ্যমে পুরো জায়গাটির একটি ভার্চুয়াল ভার্সন তৈরি করেন। এটি ছিল এক ধরনের ডিজিটাল টুইন বা সিমুলেশন পরিবেশ, যেখানে তারা বিভিন্ন পরীক্ষা চালাতে থাকেন।
তিনি বলেন, “আমরা একরকম দেওয়ালে জিনিস ছুঁড়ে মারছিলাম—দেখছিলাম, যদি এটা করি কী হয়? ওটা করি কী হয়?”
তাদের প্রথম আইডিয়া ছিল, মানুষের মতো দেখতে রোবট দিয়ে সাধারণ প্যালেট জ্যাক চালানো, কিন্তু সেটা ব্যর্থ হয়। পরে তারা বাজারে সহজলভ্য রোবট নিয়ে তার মধ্যে নিজেদের প্রযুক্তি যোগ করে সাফল্য পেতে শুরু করে।
সোকলোভস্কি জানান, “আমরা জটিল সব লজিস্টিকস সমস্যাকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে ফেলেছি, যেগুলো রোবট ও সিস্টেম সহজেই বুঝতে পারে ও কাজ করতে পারে। এখন আমরা AI-এর বিভিন্ন ফর্ম যেমন ভয়েস, টেক্সট, ইমেইল, ফোন কল এবং রোবটিকস ব্যবহার করে পণ্য নামানো, সংরক্ষণ ও আবার লোড করার কাজগুলো করছি। আমাদের বিশ্বাস, আমরা এইভাবে দ্রুত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব এবং নতুন করে কর্মী নিয়োগ ছাড়াই এটা সম্ভব হবে।”
ওয়ার্পের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও CRO ট্রয় লেস্টার জানান, এই রোবটগুলো শুধু ওয়ার্পের নিজের জন্য না, বরং যেসব পার্টনার ওয়্যারহাউস ওয়ার্পের সাথে যুক্ত, তাদেরও সুবিধা হবে। কারণ এসব পার্টনার সবসময় জনবল সংকটের কথা বলে আসছে। লেস্টার বলেন, “ওয়ার্কাররাও এসব কাজ পছন্দ করছে না। তাই এই রোবটিক কিট তাদেরকে শুধু আমাদের জন্য না, বরং অন্যান্য কোম্পানির সাথেও তাদের কাজ আরও ভালো করতে সাহায্য করবে।” ওয়ার্প এই উদ্যোগের জন্য ১০ মিলিয়ন ডলারের একটি সিরিজ এ ফান্ড সংগ্রহ করেছে, যেখানে নেতৃত্ব দিয়েছে Up.Partners এবং Blue Bear Capital। ওয়ার্প এখন বিভিন্ন ধরনের রোবট পরীক্ষা করছে এবং বলছে, তারা এই বছর থেকেই রোবট বাস্তব ব্যবহারে আনবে। কলোভস্কি জানান, তাদের লস অ্যাঞ্জেলেসের পরীক্ষামূলক ওয়্যারহাউস এখন পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলছে। এবার তারা এই রোবটগুলো তাদের মূল নেটওয়ার্কের শহরগুলোতে চালু করতে যাচ্ছে—যেমন লস অ্যাঞ্জেলেস, শিকাগো, নিউ জার্সি, ডালাস ও মিয়ামি। তবে আপাতত তারা এই প্রযুক্তি বাইরে বিক্রি করবে না, কারণ এটি ওয়ার্প এবং তাদের পার্টনারদের জন্য একটি প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা তৈরি করছে।
সোকলোভস্কি বলেন, “আমরা শুধু একটি রোবট বা AI কোম্পানি হয়ে উঠতে চাই না, যে শুধু ধারণা বিক্রি করে টাকা ব্যয় করে। বরং আমরা একটি বাস্তব লজিস্টিকস কোম্পানি, যারা বিগত কয়েক বছর ধরে গ্রাহকদের সত্যিকারের সেবা দিয়ে আসছে। আমরা এমন একটি অসাধারণ সিস্টেম ও ইকোসিস্টেম তৈরি করেছি, যা আমাদের এই ধরনের অটোমেশন সহজে বাস্তবায়ন করতে দিচ্ছে।”