
MetAI এমন একটি স্টার্টআপ যা ডিজিটাল টুইন প্রযুক্তি ব্যবহার করে এআই এবং ৩ডি প্রযুক্তির মাধ্যমে বাস্তব জগতের ভার্চুয়াল মডেল তৈরি করে। ডিজিটাল টুইন প্রযুক্তি বিভিন্ন শিল্পে উদ্ভাবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি সিমুলেশন এবং প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়াকে সহজতর এবং দ্রুততর করে তোলে। মেটএআই-এর Mega উদ্ভাবনী পদ্ধতি CAD ফাইলকে মাত্র কয়েক মিনিটে কার্যকরী ৩ডি পরিবেশে রূপান্তর করতে সক্ষম, যা আগে হাজার হাজার ঘণ্টার কাজের প্রয়োজন হতো।এই স্টার্টআপ সম্প্রতি $৪ মিলিয়ন বিনিয়োগ সংগ্রহ করেছে, যার প্রধান বিনিয়োগকারী এনভিডিয়া। এটি এনভিডিয়ার জন্য একটি বড় পদক্ষেপ, কারণ তারা প্রথমবারের মতো একটি তাইওয়ানিজ স্টার্টআপে বিনিয়োগ করেছে। অন্যান্য বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কেনমেক মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, সলোমন টেকনোলজি, স্পার্কল্যাবস তাইওয়ান, অ্যাডিন ভেঞ্চারস এবং আপস্ট্রিম ভেঞ্চারস। এই বিনিয়োগ মেটএআই-এর গবেষণা ও উন্নয়নকে আরও গতিশীল করবে এবং তাদের পণ্য উন্নয়নে সহায়তা করবে।মেটএআই বিশেষ করে সেমিকন্ডাক্টর কারখানা, স্মার্ট গুদাম এবং অটোমেশনের জন্য ডিজিটাল টুইন তৈরি করছে।
এআই-চালিত এই প্রযুক্তি সিমুলেশনের মাধ্যমে কৃত্রিম ডেটা তৈরি করতে পারে, যা এআই প্রশিক্ষণ এবং যাচাই প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর এবং নির্ভুল করে তোলে। এই প্রযুক্তি স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম ও রোবট তৈরি এবং বাস্তবায়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।মেটএআই-এর সিইও ড্যানিয়েল ইউ উল্লেখ করেছেন যে, ডিজিটাল টুইন তৈরির প্রথাগত পদ্ধতিগুলি সময়সাপেক্ষ এবং ব্যয়বহুল। তাদের উদ্ভাবনী প্রযুক্তি এই প্রক্রিয়াটিকে সহজতর করে তুলেছে, যা অনেক কোম্পানির জন্য ডিজিটাল টুইন ব্যবহার করা সম্ভব করেছে। এই প্রযুক্তি সিমুলেশন এবং বাস্তব অপারেশনের মধ্যে ব্যবধান কমিয়ে আনতে সাহায্য করে।২০২৩ সালে মেটএআই কেনমেকের সঙ্গে মিলে একটি স্বয়ংক্রিয় গুদামের ডিজিটাল টুইন তৈরি করেছে। এই প্রকল্পে তারা সিমুলেশনের সময় হাজার হাজার ঘণ্টা থেকে মাত্র ৩ মিনিটে নামিয়ে এনেছে। এর ফলে অপারেশনাল খরচ এবং সময় উল্লেখযোগ্যভাবে সাশ্রয় হয়েছে। এটি মেটএআই-এর প্রযুক্তির কার্যকারিতা এবং দক্ষতার একটি চমৎকার উদাহরণ।
মেটএআই-এর অন্যতম লক্ষ্য হলো তাদের প্রযুক্তি ব্যবহার করে শিল্পের বিভিন্ন খাতে উদ্ভাবন আনা। রোবোটিক্স, উৎপাদন এবং স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম তৈরির ক্ষেত্রে তাদের প্রযুক্তি একটি নতুন মান স্থাপন করতে পারে। এনভিডিয়ার মতে, মেটএআই-এর ডিজিটাল টুইন প্রযুক্তি শিল্পে এআই প্রশিক্ষণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হতে পারে।মেটএআই তাদের প্রযুক্তি SaaS (সফটওয়্যার অ্যাজ এ সার্ভিস) মডেলে সরবরাহ করার পরিকল্পনা করছে। এর ফলে তারা গ্রাহকদের জন্য এন্ড-টু-এন্ড সমাধান প্রদান করতে পারবে, যা তাদের বাজার সম্প্রসারণে সহায়তা করবে।তারা ২০২৫ সালের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাদের সদর দপ্তর স্থানান্তরের পরিকল্পনা করেছে, যেখানে শ্রম খরচ এবং অপারেশনের জটিলতা তুলনামূলকভাবে বেশি।তাইওয়ান তাদের পরীক্ষার ক্ষেত্র হিসেবে কাজ করছে, যেখানে তারা স্থানীয় শিল্প নেতাদের সাথে মিলে কাজ করে গভীর জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করছে। এই জ্ঞান তারা ভবিষ্যতে মার্কিন বাজারে ব্যবহার করতে চায়, যেখানে অটোমেশন এবং ডিজিটাল টুইন প্রযুক্তির চাহিদা বাড়ছে।মেটএআই তাদের প্রতিযোগীদের তুলনায় অনেক অগ্রগামী কারণ তারা শুধু কার্যকরী ডিজিটাল টুইন তৈরি করে না, বরং সেগুলি এআই প্রশিক্ষণ এবং বাস্তব জগতে প্রয়োগের জন্যও উপযুক্ত করে তোলে।
তাদের উদ্ভাবনী পদ্ধতি সিমুলেশন এবং বাস্তব অপারেশনের মধ্যে ব্যবধান কমিয়ে এনে শিল্পে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।তারা কৃত্রিম ডেটা তৈরি করার জন্য একটি বিশেষ পদ্ধতি ব্যবহার করে, যা এআই সিস্টেমকে দ্রুত এবং কার্যকরভাবে প্রশিক্ষণ দিতে সহায়তা করে। এর ফলে উৎপাদন এবং অটোমেশন খাতে দ্রুত উদ্ভাবন সম্ভব হয়েছে। মেটএআই বিশ্বাস করে যে তাদের প্রযুক্তি ভবিষ্যতে রোবোটিক্স এবং অটোমেশন খাতে একটি বড় পরিবর্তন আনতে পারে।মেটএআই তাদের গবেষণা এবং উন্নয়নে আরও বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা করছে, যা তাদের পণ্যের মান এবং কার্যকারিতা আরও উন্নত করবে। এছাড়া, তারা তাদের মার্কিন সম্প্রসারণ কৌশল দ্রুত বাস্তবায়ন করবে এবং নতুন বাজারে প্রবেশ করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।মেটএআই-এর এই সাফল্য এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তাদের প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতির একটি প্রতিফলন। এটি শুধু তাইওয়ানের জন্য নয়, বরং বিশ্বের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হয়ে উঠছে।
