
মাইক্রোসফট সম্প্রতি তাদের কপাইলট AI প্ল্যাটফর্মের একটি প্রযুক্তি প্রদর্শনী হিসেবে ক্লাসিক ভিডিও গেম কোয়েক II-এর একটি ব্রাউজার-ভিত্তিক, খেলার উপযোগী একটি লেভেল প্রকাশ করেছে। এটি আপনি ইচ্ছা করলে নিজেই খেলতে পারেন, যেখানে কয়েক মিনিটের জন্য কিবোর্ড দিয়ে চরিত্রকে চালিয়ে দেখা যায়। তবে নির্দিষ্ট সময় শেষে গেম থেমে যায়।গবেষকদের মতে, Muse নামের AI মডেলটি গেমের ভেতরের জগত নকল করে এবং ব্যবহারকারী এতে সরাসরি কিবোর্ড বা কন্ট্রোলার দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তারা কোয়েক II-এর একটি লেভেলের উপর মডেলটি প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং এর ফলে খেলোয়াড়রা হেঁটে বেড়াতে, ক্যামেরা ঘোরাতে, লাফাতে, বসতে, গুলি ছুঁড়তে এবং ব্যারেল ফাটাতে পারে, ঠিক যেন মূল গেমের মতোই।তবে মাইক্রোসফট সরাসরি জানিয়েছে যে এটি আসল গেম খেলার অভিজ্ঞতার মতো নয়, বরং “মডেলের মধ্যে খেলা”। এর মধ্যে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। যেমন, শত্রুরা অনেক সময় ঝাপসা দেখা যায়, হেলথ ও ড্যামেজ কাউন্টার সঠিকভাবে কাজ না করতে পারে, এবং সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, মডেলটি জিনিসপত্র মনে রাখতে পারে না — স্ক্রিন থেকে কিছু এক সেকেন্ডের মতো হারিয়ে গেলেই AI তা ভুলে যায়।গবেষকরা বলছেন, এই ধরনের সমস্যা কখনো কখনো মজারও হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি এক সেকেন্ডের জন্য মেঝে বা আকাশের দিকে তাকান, তারপর সামনে তাকান, তাহলে দেখা যাবে শত্রুরা হঠাৎ গায়েব বা হাজির হয়ে গেছে। এমনকি আপনি হঠাৎ এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় টেলিপোর্ট হয়ে যেতে পারেন।তবে এই প্রযুক্তি নিয়ে সমালোচনাও আছে। গেম ডিজাইনার এবং লেখক অস্টিন ওয়াকার এই ডেমো খেলতে গিয়ে নিজের চরিত্রকে একটি অন্ধকার ঘরে আটকে পান এবং বলেন, এটি মজার তো নয়ই, বরং এই ধরনের AI ডেমো প্রমাণ করে যে যারা এটি তৈরি করেছে, তারা গেম কীভাবে কাজ করে তা ভালোভাবে বোঝেন না।তিনি বলেন, কোয়েকের মতো গেম তৈরি হয় অনেক কিছু একসাথে মিশিয়ে — কোড, ডিজাইন, ৩ডি আর্ট, অডিও — আর এই জিনিসগুলো মিলেই তৈরি হয় এক একটি বিশেষ অভিজ্ঞতা। যদি এই সব মূল উপাদান ঠিকঠাক পুনরায় তৈরি না করা যায়, তাহলে গেমের সেই বিশেষত্ব আর থাকে না।মোটকথা, মাইক্রোসফটের এই উদ্যোগ ভবিষ্যতে AI দিয়ে গেম তৈরি বা সংরক্ষণের সম্ভাবনা দেখালেও, এখনো তা অনেক অপূর্ণ। এটি গবেষণার অংশ হিসেবেই ভালো কাজ করেছে, তবে আসল গেম খেলার অভিজ্ঞতা এখনো বহুদূরে।